প্রেম করার সময় আমাদের আবেগ বেড়ে যায়, আর বিয়ে করার পরপরই আমাদের বিবেক ও মনুষ্যত্ব দুটিই লোপ পায়। সংসার জীবনে সুখে থাকতে একে অন্যের প্রতি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সঠিক বোঝাপড়া, সহনশীলতা ও শ্রদ্ধাভাব জাগ্রত হওয়া উচিত। অথচ আমরা অনেক সময় একে অন্যকে অবহেলা করি, শারিরিক আকর্ষণের উন্মাদনা শেষে একজনের কাছে অন্যজনকে অসহ্য লাগা শুরু হয়, সামান্য বিষয় নিয়ে একে অন্যের প্রতি ভুল বোঝাবোঝির শুরু করি। অধিকাংশ সময় আমরা ভুলেই যাই যে, সংসার জীবন মানে একটি দায়িত্ববোধের ব্যাপার।
আমরা শুধু ভোগ করাকেই সংসার ভাবি! অথচ ভোগ আর উপভোগের মাঝখানে যে একটা বিরাট ফারাক আছে, সেটা বুঝতে কষ্ট হয় বলেই আমাদের দাম্পত্য জীবনে অশান্তি চলে আসে। প্রতিদিন নিয়ম করে একে অন্যের নগ্ন দেহ ভোগ করার মানে সংসার নয়! সংসার মানে দুটি তরুণ-তরুণী অজস্র সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নার মধ্য দিয়ে সারা জীবন একত্রে চলার জন্য দৃঢ়ভাবে শপথ নেয়া।
প্রকৃত ভালবাসায় কখনো অনিহা আসেনা। তাই যৌন চাহিদা মেটানোর পরেই বিপরীত লিঙ্গের মানুষটিকে পাশ কাটিয়ে শুয়ে পরার মানে সংসার বলা যায়না। যৌন তৃপ্তির পরেও বিপরীত লিঙ্গের মানুষটিকে আদর করে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে, ঘুম পারিয়ে দেয়ার নাম সংসার।
সংসার জীবন এক মধুর বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমে সংসার জীবনের ভিত্তি শুরু হয়। সংসার জীবনে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি পারস্পারিক স্নেহ, প্রেম, ভালোবাসা, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, দায়িত্ব ও কর্তব্য নিহিত রয়েছে। বিপরীত লিঙ্গের সমস্ত চাওয়া-পাওয়া, ইচ্ছা-অনিচ্ছার সাথে নিজের চাওয়া-পাওয়া ও ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে এক ও অভিন্ন ভাবে মিলিয়ে নিয়ে একত্রিত অনুভুতিতে প্রতিষ্ঠা করার নাম দাম্পত্য জীবন বা সংসার জীবন।
আমাদের সমাজে এমন অনেক লোক আছে যারা মনে করে, বিয়ের মাধ্যমে শুধুমাত্র একে অন্যের দেহ ভোগ করার মানেই দাম্পত্য জীবন বা সংসার জীবন। তারা মনে করে যৌন মিলনের ছাড়পত্রই হচ্ছে বিয়ে। তারা মূর্খ। আমি তাদের মূর্খ ছাড়া আর কোন ভাল গালি দিতে পারছি না। তারা সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নায় সারা জীবন যে বিপরীত লিঙ্গ পাশে থাকবে, তাকে শুধুমাত্র যৌন দাসী হিসাবে বিবেচনা করে।
বউ মানে যে শুধুমাত্র যৌন জীবনের দাসী, তা নয়। তারও স্বতন্ত্র মন থাকতে পারে। তাই তার প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত। উলঙ্গ দেহের প্রতি কোন আকর্ষণ আমাদের তৃপ্ত দিতে পারেনা, যদি বিপরীত লিঙ্গের মন পাওয়া না যায়, ভালোবাসা পাওয়া না যায়। জোর করে শুধুমাত্র দেহ ভোগ করা যায়, কিন্তু ভালোবাসা পাওয়া যায়না। ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসা পেতে হয়। আর ভালোবাসার সাথে দেহ শব্দটা অভিচ্ছেদ্য।
আমরা শুধুমাত্র বিপরীত লিঙ্গের দেহের স্বাদ ভোগ করতে শিখেছি। প্রকৃতপক্ষে ভালোবাসতে শিখিনি। যার ফলে আমাদের দাম্পত্য জীবনে অশান্তি চলে আসে। একে অন্যের প্রতি অবহেলা যতই দিন যাচ্ছে ততই প্রকট আকার ধারণ করছে। বিপরীত লিঙ্গের সাথে নানা ধরনের মনোমালিন্যের সৃষ্টি হচ্ছে ভালবাসার অভাবে। দাম্পত্য জীবনে দেখা দিচ্ছে সমঝোতার পরিবর্তে ঝাগড়া-বিবাদের। ফলে যুবসমাজ বিয়ের প্রতি দিনদিন আগ্রহ হারাচ্ছে। সমকামিতার প্রতি ঝুঁকে পড়ছে সমাজের একটি বিরাট অংশ।
আমরা ছেলেরা সবচেয়ে বেশি স্বার্থপর। বিয়ের আগে প্রেম করার সময় কত সুন্দর আচরণ করি প্রেমিকার সাথে। অথচ বিয়ের পর আমরা ভুলে যাই যে, মেয়েদেরও ব্যক্তিত্ব বলে একটি জিনিস আছে। স্বতন্ত্র একটি মন আছে। আমরা সব সময় মেয়েদের উপর প্রভুত্ব করার চেষ্টা করি। অথচ আমরা যদি প্রভুত্ব করার পরিবর্তে সমঝোতার পথে চলতে পারতাম, তাহলে আমাদের দাম্পত্য জীবন সুখ শান্তিতে ভরে যেতো।
বউ কোন যৌন দাসী নয়, জীবনসঙ্গী। এটাই হোক আমাদের দাম্পত্য জীবনের মৌলিক বিশ্বাস।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই লেখাটি বিডিনিউজ২৪ এ ২২ জানুয়ারী ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
সুন্দর একটি লেখনি। আমি আপনার লেখাটি বিডিনিউজে পড়েছি
ধন্যবাদ আপনাকে
আপনার লেখাটি কেউ একজন ফেসবুকে কপি করছে। আপনার লেখাটি প্রকাশিত হয়েছিল ২২ জানুয়ারী ২০১৮ সালে। আর ফেসবুকে লেখাটি কপি হয়েছে ২০২০ সালে অন্য নামে।
কপিকৃত লেখার একটি লিঙ্ক আমাকে দিয়ে সাহায্য করবেন, ধন্যবাদ আপনাকে
ধর্ম মতে জীবন গড়ুন। শান্তি এমনিতেই আসবে
ধন্যবাদ, আপনার উপদেশের জন্য
রাইট
ধন্যবাদ
রাইট
ধন্যবাদ
right
Love is life